Posts

Showing posts from June, 2020

ভাল ভাইরাস, মন্দ ভাইরাস

Image
নভেল করোনাভাইরাস, ইবোলা, সার্স বা এইচআইভির মতো আরও কিছু উগ্রপন্থী ভাইরাসদের কাণ্ডকারখানা দেখে সমগ্র ভাইরাস জাতির কপালে ‘দুষ্কৃতি’ তকমা এঁটে দেওয়া ঠিক নয়। মন্দ ভাইরাস যেমন আছে, তেমন অনেক ভাল ভাইরাসও আছে পৃথিবীতে। ভাইরাস না থাকলে মানুষ বাঁচতই না। এমনকী, এখন তো অসুখ সারাতেও ভাইরাস ব্যবহার করা হচ্ছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে। মানুষের সঙ্গে ভাইরাসের সম্পর্কটা বেশ নিবিড় এবং বহুকালের। বেশ কিছু ভাইরাস আমাদের অসুস্থ করে। আবার এমন অনেক আছে যারা আমাদের সুস্থও করে তুলতে পারে। ভাইরাস যে আমাদের অসুখ সারাতে পারে তার প্রমাণ মেলে বছর চারেক আগে। ‘ডিস্কভার ম্যাগাজিন’-এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে যে, ঘটনাটি ঘটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে। সেখানে ৭৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তির হার্টের শিরায় অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু সেরে ওঠার বদলে, সেই ক্ষত স্থানে দেখা দেয় ইনফেকশন বা সংক্রমণ। যথেষ্ট পরিমাণে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা সত্ত্বেও, পরিস্থিতির উন্নতি হয় না। উপরন্তু ব্যাক্টিরিয়ার সংক্রমণ ক্ষতটিকে বাড়িয়ে তোলে। ফলে, রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। স্পষ্টতই, এ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করেনি। ওই

সাইবেরিয়া এখন কলকাতার চেয়েও গরম

Image
সাইবেরিয়ার চেয়ে কলকাতা ঠাণ্ডা। কথাটা অবিশ্বাস্য ঠেকলেও, সেটাই বাস্তব। মানুষের কর্মকাণ্ডের ফলে বিশ্ব উষ্ণায়ন এমনই পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রার ক্ষেত্রে সাইবেরিয়া কলকাতাকে টেক্কা দিচ্ছে। ২০ জুন সাইবেরিয়ার সুদূর উত্তরের শহর ভেরখোইয়ান্সে দিনের তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর কলকাতা আবহাওয়া দপ্তরেরতথ্য অনুযায়ী , ওই দিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস । অর্থাৎ, সে দিন, সাইবেরিয়ার ওই শহর ছিল কলকাতার চেয়ে পুরো ৫.৬ ডিগ্রি বেশি গরম। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন যে, সাইবেরিয়ার জানা-ইতিহাসে অত গরম এর আগে কখনও পড়েনি। ওয়াশিংটন পোস্টের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, সমগ্র আর্কটিক অঞ্চলে এটাই হল এখনও পর্যন্ত রেকর্ড তাপমাত্রা। ১৮৫৫ সাল থেকে পৃথিবীর নানা প্রান্তের তাপমাত্রা নথিভুক্ত করা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, এবারই প্রথম ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছল সাইবেরিয়ার তাপমাত্রা। লাইভসায়েন্সের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে যে, ভেরখোইয়ান্স শহর রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে ৪,৮০০ কিমি দূরে। সে শহরের বাসিন্দার সংখ্যা ১৩০০। আরও জানা গেছে যে, পৃথিবীতে যে সব জায়গায় তাপমাত্রা খুব বেশি

আরও পঙ্গপাল, আসছে বিরাট এক ঝাঁক

Image
জুনের শেষে আরও মরু পঙ্গপাল আসছে ভারতে। ইতিমধ্যেই একটা ঝাঁক পাঁচ রাজ্যের ৪১ জেলায় ঘাঁটি গেড়েছে। এখন জানা যাচ্ছে, আরও আসছে। এবং যে ঝাঁকটা আসছে, সেটা নাকি বিরাট। পূর্ব আফ্রিকার শুকন অঞ্চল থেকে আসছে ওই ঝাঁক। রাজস্থানই তাদের প্রথম গন্তব্যস্থল বলে অনুমান করা হচ্ছে। তারপর তারা কোথায় ছড়িয়ে পড়বে, কে বলতে পারে। আর ভয়ের ব্যাপার হল, জুনের শেষ থেকেই শুরু হবে চাষের কাজ। তাই সেই সময় দ্বিতীয় এক অতিকায় পঙ্গপালের ঝাঁক হাজির হলে, চাষের খুব ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একদিকে নভেল করোনাভাইরাস, যাকে চোখে দেখা যায় না, আর অন্যদিকে আকাশ কালো করে ধেয়ে আসা পঙ্গপালের দল, দুয়ে মিলে ভারত যেন এক সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে পড়েছে। পঙ্গপাল এক ধরনের ফোড়িং। এমনিতে সংখ্যা যখন কম থাকে, তখন একা একা থাকতেই তারা ভালবাসে। কিন্তু আবহাওয়া অনুকূল হলে, তাদের সংখ্যা বেড়ে যায়। আর তখন একটা অদ্ভুত পরিবর্তন ঘটে তাদের আচরণে। মানুষের মস্তিষ্কে সেরোটনিন বলে এক রাসায়নিক পদার্থ তৈরি হয়, যা আমাদের মানসিক অবস্থা আর আচরণকে প্রভাবিত করে। যেমন আমাদের রাগ, হতাশা, আনন্দ, এ সবের পেছনে ওই সেরোটনিনের হাত থাকে বলে জানা গেছে। আবার একটা নিরীহ, অক

আম্পানের সঙ্গে পাঞ্জা লড়েছে বাদাবনের প্রহরীরা

Image
বিশেষজ্ঞরা বলেন, সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বা বাদাবন পশ্চিমবঙ্গ আর বাংলাদেশের উপকূলবাসীদের বিধ্বংসী ঝড়ের হাত থেকে অনেকটাই বাঁচিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কত দিন আর তারা রক্ষা করতে পারবে আমাদের? বঙ্গোপসাগর থেকে প্রবল রোষে ধেয়ে আসা সব ঘূর্ণিঝড়ই প্রথম বাধা পায় বাদাবনের কাছে। গাছপালাগুলি শক্ত শেকড়ের জাল বিছিয়ে মাটি কামড়ে দাঁড়িয়ে থাকে আর ডালপালারা দেওয়াল তুলে ঝড়ের গতি কমানোর চেষ্টা করে। ফলে, ঝড় যতক্ষণে মোহনা অতিক্রম করে আরও ভেতরে ঢোকে, ততক্ষণে তার গতি বেশ কিছুটা কমে যায়। এই অঞ্চলের উপকূলবাসীদের ক্ষেত্রে, ওই বাদাবন ঘূর্ণিঝড়ের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে কাজ করে। এবারের বিধ্বংসী আম্পান যে দিন এসেছিল, সে দিনও হেতাল, গরান, গর্জন, বাইন, সুন্দরীরা, যারা মিলে মিশে তৈরি করেছে সুন্দরবনের বাদাবন, তারা কয়েক লক্ষ সেনানীর মত বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল তার বিরুদ্ধে। উপকূল জুড়ে ওই পদাতিক বাহিনী মোতায়েন না থাকলে, ক্ষয়-ক্ষতি আরও মারাত্মক হতে পারত বলে মনে করা হচ্ছে। আগেও ঝড় বয়ে গিয়েছিল তাদের ওপর দিয়ে। তবে এবার ভয়ঙ্করতম আম্পানের আক্রমণের মুখেও তারা অটল থেকেছে। বাদাবনের ৩০ প্রজাতির ম্যানগ্রোভ গাছেরা। এবং এই বনের সদস

আম্পান, নিসর্গ, পঙ্গপাল

Image
দেশজুড়ে নভেল করোনাভাইরাসের সৃষ্টি-করা কোভিড-১৯ অতিমারি তো চলছিলই। তারই মধ্যে পর পর এল ঘূর্ণিঝড়। পশ্চিমবঙ্গ আর ওড়িশায় বিধ্বংসী আম্পানের তাণ্ডব শেষ হতে না হতেই আরও এক লণ্ডভণ্ড-করা ঝড়, যার নাম কিনা আবার নিসর্গ, আছড়ে পড়ল মহারাষ্ট্র আর গুজরাটের উপকূলে। আম্পান এসেছিল ভারত মহাসাগর থেকে। নিসর্গ এল আরব সাগর বেয়ে। দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগণার ওপর দিয়ে আম্পান যখন বয়ে যাচ্ছিল, তখন তার গতি ছিল ঘন্টায় ১৫৫-১৬৫ কিমি। কলকাতায় ১১০-১২০ কিমি। আর মুম্বাই শহরকে কিঞ্চিত রেহাই দিয়ে নিসর্গ যখন রায়গড় জেলায় আঘাত হানল তখন তার গতি ছিল ঘন্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিমি। এবং পূর্ব আর পশ্চিম ভারতে অল্প দিনের ব্যবধানে দুটি প্রলয়ের মাঝেই, উত্তর ভারতে শুরু হল এক নিঃশব্দ হানাদারি—পঙ্গপালের আক্রমণ। এই তিনটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় বিচ্ছিন্ন আর স্বতন্ত্র মনে হলেও, বিজ্ঞানীরা কিন্তু এদের মধ্যে একটা যোগসূত্র দেখতে পাচ্ছেন। সেটি হল উষ্ণায়ন। বলা হচ্ছে, সমুদ্রের জলের উষ্ণতা বাড়ছে। তার ফলে, সমুদ্রপৃর্ষ্ঠের ওপরের বাতাস আগের তুলনায় বেশি গরম হচ্ছে। আর ওই গরম হাওয়া তুলে নিচ্ছে বেশি পরিমাণ বাষ্প। সেই অধিক বাষ্প উত্তোলনের ফলেই সাগর, মহাসাগরে ঘন ঘন