Posts

Showing posts from April, 2020

বরফ-হীন উত্তরমেরু

Image
উত্তরমেরুতে আর বরফ থাকবে না। ২০৫০ সালের মধ্যেই তেমনটা ঘটবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্তত, গ্রীষ্মের সময় বরফের ওই রাজ্য বরফশূন্য হয়ে পড়বে। তবে বছরে কত মাস উত্তরমেরু বরফ-হীন থাকবে, তা নির্ভর করবে জলবায়ু পরিবর্তন কতটা ঠেকান করা যাচ্ছে, তার ওপর। বিশ্বের ২১ গবেষণা কেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্যে বিশ্লেষণ করে জার্মানির হামবুর্গ ইউনিভারসিটির বিশেষজ্ঞরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।   এখনও উত্তরমেরু সারা বছরই বরফে ঢাকা থাকে। গ্রীষ্মের দিনগুলিতে সেই বরফের পরিমাণ কমে যায়। শীত এলে আবার বেড়ে যায় বরফ।   কিন্তু উষ্ণায়ণের ফলে, বিগত কয়েক দশক ধরে সেখানে বরফ ক্রমশ কমে যাচ্ছে। যতটা গলছে, ততোটা তৈরি হচ্ছে না। অথচ, ওই বরফই সেখানকার পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে। বরফই সাদা ভালুক, সিল ও আরও অনেক প্রাণীর বাসস্থান। তারই মধ্যে আছে তাদের খাদ্য ভাণ্ডার ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি। আর ওই বরফের চাদরই সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে ঠিক রাখে সেখানকার তাপমাত্রা।        বরফ-হীন হয়ে পড়লে বিপন্ন হবে সেখানকার পরিবেশ ও প্রাণীরা। সেই পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে সুদূর দক্ষিণমেরুতেও। উত্তরমেরুতে যে একটা বিপর্যয় ঘনাচ্ছে তার স্পষ্ট ইং

জেনেছি, কিন্তু শুনিনি

Image
“এই গ্রহে মানুষের আধিপত্যের সামনে সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে ভাইরাস।” এ কথা বলেছিলেন ১৯৫৮ সালের নোবেলজয়ী মাইক্রোবায়োলজিস্ট জশোয়া লেডেরবার্গ।  ভাইরাস থেকে যে একটা অতিমারি ঘটবে, সেরকম আশঙ্কা করা হচ্ছিল অনেক দিন ধরে। এক বার নয়, দু’বার নয়, সতর্ক করা হয়েছিল বার বার। সেই ১৯৯০-এর দশক থেকে সাবধান করছিলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছিলেন: পৃথিবী জুড়ে একটা অতিমারি কেবল সময়ের অপেক্ষায়। জশোয়া লেডেরবার্গ   ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক-এর একটি সাম্প্রতিক লেখার শিরোনামে প্রশ্ন করা হয়েছে যে, বিশেষজ্ঞরা একটা অতিমারি সম্পর্কে সাবধান করে ছিলেন কয়েক দশক আগে। তা সত্ত্বেও আমরা প্রস্তুত হইনি কেন? লেখাটি লিখেছেন সাংবাদিক রবিন মারান্তস হেনিগ।   চিকিৎসা বিজ্ঞানে, বিশেষ করে ভাইরাস সংক্রান্ত গবেষণায়, কি জানা যাচ্ছে, তাই ছিল তাঁর আগ্রহের বিষয়। বিজ্ঞানীরা জীবাণু সম্পর্কে কি জানতে পারছেন, ভাইরাসদের গতিবিধি কেমন দাঁড়াচ্ছে, ভাইরাসদের কাছ থেকে মানুষ কতটা হুমকির মুখে পড়তে চলেছে, এই নিয়ে বই লেখার জন্য নিজেও গবেষণা শুরু করেন ১৯৯০-তে। তাঁর বইটির নাম ডানসিং ম্যাট্রিক্স।   হেনিগ বলছেন, সেই সময়ই বিশেষজ

গোলাপি মুখ তাদের আলাদা করেছে

Image
          বিপন্ন যারা তাদের লোমহীন রঙিন মুখমন্ডলের জন্য উআকারি’রা বিশেষ পরিচিত।   গোলাপি থেকে গাড় লাল রঙের সেই মুখ অন্য বানর প্রজাতি থেকে তাকে আলাদা করেছে।   বানর প্রজাতির ছোট্ট এই প্রাণীটি দক্ষিণ আমেরিকার ক্রান্তীয় বর্ষারণ্যের বাসিন্দা।   নদী ঝর্ণা ইত্যাদি মিষ্টি জলের কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করে তারা।   অ্যামাজন নদীর অববাহিকায় ব্রেজিল, পেরু, দক্ষিণ কলোম্বিয়ার কিছু অঞ্চলে তাদের   দেখা মেলে।     দেড় থেকে দু ফিট লম্বা এই উআকারিদের ওজন হবে খুব বেশি হলে কেজি তিনেক।   সারা গায়ে বেশ বড় বড় লোম হলে কী হবে দেহের তুলনায় তার লেজটি খুবই ছোট।   ফলে এক গাছ থেকে আর এক গাছে লাফালাফির সময় ওই খুদে লেজটি তেমন কাজে দেয় না।   তা সত্ত্বেও তারা ৬৫ ফিটের বেশি দূরত্বেও লাফাতে পারে।   এবং এই লাফানোর ব্যাপারে তাদের বেশ শক্তপোক্ত হাত-পাকেই তারা কাজে লাগায়।   অবশ্য শরীরের ব্যালেন্স বা ভারসাম্য বজায় রাখতে ওই ছোট্ট লেজটা কিছুটা সাহায্য করে।    গাছের একেবারে উঁচুতে ঘন পাতার আড়ালে থাকাই পছন্দ তাদের।   ঘন মোটা লোমে ঢাকা উআকারিদের লোমের রঙও বিভিন্ন।   প্রজাতি অনুযায়ী লাল, বাদামি, কালো ও সাদা হয়

গেরিলা ভাইরাস

Image
  ভাইরাসের তো মাথাও নেই, মুণ্ডুও নেই। কিন্তু নভেল করোনাভাইরাসের আক্রমণের কৌশল সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত যা জানা গেছে, তা থেকে বেশ পাকা মাথার হানাদার বলেই মনে হয় তাকে। শুধু তাই নয়, অনেকটা যেন গেরিলা কায়দায় সে হঠাৎই আক্রমণ করে। সে কথায় পরে আসছি। তার আগে এই করোনার বংশপরিচয়টা একটু জেনে নেওয়া যাক।   কোভিড-১৯ অসুখটা সৃষ্টি করে একটি করোনাভাইরাস - এসএআরএস সিওভি-২ বা সার্স-কভ-২ (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটারি সিন্ড্রোম করোনাভাইরাস-২) ।করোনাভাইরাস একটি নয়, অনেকগুলি আছে। সেগুলি সবই একটি বিশেষ গ্রুপের ভাইরাস, যারা প্রাণীদের আক্রমণ করে, তা সে ময়ূরই হোক বা তিমি।   এই ভাইরাসগুলির নাম করোনা হওয়ার কারণ আছে। ইংরেজি শব্দ ‘করোনা ’ র মানে, ‘আলোকমণ্ডল ’ । যেমন, সূর্যর চারদিকে যে আলোর বলয় থাকে, তাকে করোনা বলা হয়। সার্স-কভ বা করোনাভাইরাসের চারপাশেও একটা বলয় লক্ষ করা যায়। সেটা কোনও আলোর বৃত্ত নয়। বরং ওই ভাইরাসের শরীর থেকে বেরিয়ে-থাকা লম্বা লম্বা ছুঁচের মত প্রোটিনের অংশ, যেগুলি যেন একটা জ্যোতির্বলয় সৃষ্টি করে ভাইরাসটির চারপাশে। তাই নাম, করোনাভাইরাস। ২০০৩ সালে দেখা দিয়েছিল সার্স-কভ (সিভিয়ার অ্যাকি

ভাইরাস রপ্তানি

Image
  ১২ অক্টোবর ১৪৯২। তারিখটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আবিষ্কারের দিক থেকে আর সংক্রমণের দিক থেকেও।   কলম্বাস সেদিন ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছেছিলেন। কলম্বাস বেরিয়ে ছিলেন ভারত এবং এশিয়ার খোঁজে। ইউরোপবাসীর কাছে ভারত তখন এক রূপকথার দেশ। তার ধনরত্ন, বিপুল ঐশ্বর্যের কথা রাজা রাজড়া আর বিত্তবানদের মুখেমুখে ফিরত। যে ইউরোপীয় দেশ ভারতে প্রথম পৌঁছতে পারবে, সে দেশ অন্যদের পেছনে ফেলে সমৃদ্ধির পথে তরতর করে এগিয়ে যাবে, এমনটাই ছিল বিশ্বাস। কি নেই ভারতে! সোনাদানা, মনি-মুক্ত, মশলার অকল্পনীয় সম্ভার, রেশম, আরও কত কি। কিন্তু জাহাজ যখন ছাড়ল, তখন সেটা ভারতের দিকে মুখ না করে, বন্দর থেকে চলল উল্টো দিকে।   পৃথিবীটা যে গোল, এই মত ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল। তাই কলম্বাস ঠিক করেছিলেন, তিনি অতলান্তিক মহাসাগর দিয়ে পশ্চিম দিকে যাত্রা করবেন। তাহলে, পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তে নিশ্চয় পৌঁছে যাবেন একদিন না একদিন। এবং সেদিনের মানচিত্র দেখে তাঁর ধারণা হয়েছিল, পুবের দূরত্বটা খুব বেশি নয়। মাত্র ২,৪০০ নটিক্যাল মাইল বা ৩,৮৬০ কিমি। সেই রকম হিসেব করেই, ২ অগস্ট ১৪৯২ সালে, কলম্বাসের ‘সান্টা মারিয়া’ জাহাজ স্পেন