ভাঙছে আফ্রিকা, সৃষ্টি হতে চলেছে নতুন সমুদ্র


আফ্রিকার আফার অঞ্চল

আফ্রিকা মহাদেশ খুব ধীরে আলগা হচ্ছে।  বা বলা ভাল তার একটি অংশ পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দূরে সরার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এবং নতুন একটি সমুদ্রের জন্ম হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা তেমনটাই দেখতে পাচ্ছেন। সত্যি চমকে ওঠার মতো খবর। না, তবে ৮/১০ বা ৫০ বছরের মধ্যেই তেমনটা ঘটে যাবে না।  বরং তা ঘটতে এখন থেকে সময় লেগে যাবে ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি বছর। তা লাগুক। অবশ্য তত দিনে মনুষ্য প্রজাতি পৃথিবীর বুকে আর ঘুরে বেড়াবে কিনা জানি না। অন্তত এখনকার চেহারা ও মগজ নিয়ে।   

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর অন্যতম উষ্ণ অঞ্চল পূর্ব আফ্রিকার আফার অঞ্চলই হল সেই জায়গা, ঠিক যার ভূগর্ভের অনেক অনেক নীচে টেকটনিক প্লেটগুলি একে অপরের থেকে আলগা হচ্ছে। যার ফলে আফ্রিকা মহাদেশ দু’ টুকরো হবে। আর সেই তলাতেই সমুদ্রের জন্ম হবে। যার একটা প্রমাণ হিসেবে যেন এখন থেকেই বিজ্ঞানীরা দেখছেন সেই ইথিওপিয়ান মরুভূমিতে ৩৫ মাইল দীর্ঘ একটি ফাটল দেখা দিয়েছে। 

আফ্রিকা মহাদেশের তলায় টেকটনিক প্লেট নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই গবেষণা চলছিল। তবে সম্প্রতি কিছু উপগ্রহ চিত্রের সাহায্যে গবেষকদের কাছে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে। ব্রিটেনের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক খ্রিস্টোফার মুর জানান, ‘এই জায়গাটিই পৃথিবীর একমাত্র জায়গা যেখান থেকে সমীক্ষা চালানো যায় যে, কীভাবে একটি মহাদেশের তলায় ফাটল ধরে এবং তার থেকে কীভাবে নতুন সমুদ্রের জন্ম হতে পারে।’  

সত্য যে, খুবই জটিল আর ধীর গতিতে সেই ভূতাত্ত্বিক পরিবর্তন ঘটবে। যার জন্য সময় লেগে যাবে লক্ষ লক্ষ বা কোটি বছর। কিন্তু সেই ভবিষ্যৎ পরিবর্তনের ছবিটা যে বিজ্ঞানীরা এখনই প্রত্যক্ষ করতে পারছেন এবং আমাদের জানিয়ে দিচ্ছেন সেই কি কম পাওয়া! আর তাছাড়া আমাদেরই তো কোনও ভবিষ্যৎ উত্তরপুরুষ সেই নতুন দেশ ও নতুন সাগরের নামকরণ করবে। তবে কে জানে হয়তো আরও উন্নত কোনও জীব সেই ভার নিতে পারে। 

মালবী গুপ্ত

Comments

Popular posts from this blog

হাওয়া বদল আনল ডাইনোসরদের

গঙ্গা রহস্য

জল, স্থল, অন্তরিক্ষ ভরে উঠছে জঞ্জালে