ভাল কাজের পুরস্কার দেয় বেজিরাও
মানুষের সঙ্গে বেজিদের মিল থাকার কথা নয়। সাপ দেখলেই মানুষ আঁতকে ওঠে। আর বেজিরা তাদের সঙ্গে কুংফু লড়তে যায়। তা হলেও মিল একটা আছে।
ভাল কাজ করলে পুরস্কার মেলে। মনুষ্য সমাজে এমন এক প্রথা চালু আছে। তবে সব সময় যে তা মেনে চলা হয় এমন নয়। তাই হয়তো শাস্ত্রে বলা আছে ফলের আশা কোরো না। কিন্তু ভাল কাজের জন্য পুরস্কার যে কেবল মানুষই দিয়ে থাকে, তা কিন্তু নয়।
বেজি, হ্যাঁ, বেজিরাও ভাল কাজের মর্ম বোঝে আর তার প্রতিদানও দিতে জানে। ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রোসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস’-এ।
এক
ছোট প্রজাতির বেজির ক্রিয়াকলাপের ওপর অনুসন্ধান চালান গবেষক অ্যান্ডি র্যাডফোর্ড
ও জুলি কেম। তাঁরা দেখতে চেয়েছিলেন যে ওই প্রাণীগুলির মধ্যে পুরস্কার দেওয়ার প্রথা
আছে কিনা। দেখা যায়, তা অবশ্যই আছে। বেজিরা
সমাজবদ্ধ জীব। তারা একসঙ্গে মিলেমিশে থাকে। যখন এক দল খাবারের সন্ধানে বেরয় তখন বাকি
কিছু বাসা আগলায় আর তার সংলগ্ন এলাকার ওপর নজর রাখে। কোথাও কিছু সন্দেহজনক চোখে পড়লেই ওই প্রহরীরা
বিশেষ ধরনের ডাক ডাকতে থাকে। সেই আওয়াজ শুনে সজাগ হয় আশেপাশে খাবার সন্ধানরত বেজিরা।
নয় তারা ঘরে ফেরে, আর নয়ত শত্রুর মোকাবিলা করতে তৎপর হয়।
বিজ্ঞানীরা
দেখেন যেদিনই ওই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটে, সেদিনই পাহারায়-থাকা সতীর্থদের খাতির বাড়ে।
সেদিন তাদের আদরযত্ন একটু বেশি হয়। যেমন, বেশি সময় ধরে চলে ‘গ্রুমিং’ - অর্থাৎ তাদের
শরীর পরিষ্কার করে দেওয়ার কাজ। মানুষের ক্ষেত্রে যা কিনা গা টিপে দেওয়া বা হাল্কা মালিসের
সমতুল্য।
বিজ্ঞানীরা
বলেছেন আরও একটি উল্লেখযোগ্য কথা যে, বেজিরা
মনে রাখতে পারে। অর্থাৎ, কেউ যদি দুপুরবেলা নজরদারি করে নিজেদের গোষ্ঠীর উপকার করে
থাকে, তাহলে কয়েক ঘন্টা পরে সবাই বাড়ি ফিরলে তাদের জন্য গ্রুমিং পুরস্কারের ব্যবস্থা
করা হয়। সময়ের ব্যবধান থাকলেও প্রতিদানের কথা ভোলে না তারা।
Comments
Post a Comment